এভারেস্ট জয় যেকোনো মানুষের জীবনের অসাধারণ অর্জন। কিন্তু তারও ঊর্ধ্বে রয়েছে ইনাম আল হকের মতো একজন মহৎ মানুষের সান্নিধ্য লাভ—এমন অনুভবই ব্যক্ত করেছেন তাঁর সহযাত্রীরা।
বাংলাদেশের পাখিদের আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে পরিচিত করার পথিকৃৎ, প্রখ্যাত পক্ষীবিদ ইনাম আল হকের ৮০তম জন্মদিন উপলক্ষে শনিবার (২৩ আগস্ট) রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র মিলনায়তনে আয়োজন করা হয় ‘অদম্য জীবনের উদ্যাপন’ শীর্ষক অঅনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন,
‘আমার শ্রেণিকক্ষের বাইরের শিক্ষক ইনাম আল হক। তাঁর কাছ থেকে আমি পেয়েছি নির্মোহ, নির্লোভ আর নিরহংকার মানুষ হওয়ার শিক্ষা।’
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক বলেন, ‘ইনাম আল হক নিভৃতে বহু তরুণ-তরুণীর জীবন গড়ে তুলেছেন। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কও অনন্য, যা আজ উদ্যাপনযোগ্য।’
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, ‘ইনাম আল হকের সঙ্গে সুন্দরবন ভ্রমণের অভিজ্ঞতা আমার জীবনের অবিস্মরণীয় সম্পদ। তাঁর কাছ থেকে শিখেছি লক্ষ্যে অবিচল থাকার শিক্ষা।’
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান ও বার্ড ক্লাবের সাবেক সভাপতি জালাল আহমেদ বলেন,
‘মানুষের জীবনে পরশপাথরের স্পর্শ পাওয়া বিরল সৌভাগ্য। ইনাম আল হক আমাদের সেই পরশপাথর।’
বার্ড ক্লাবের সেক্রেটারি সীমান্ত দীপু বলেন, ‘তিনি মানুষকে শেখান দৃষ্টির বাইরের জগৎকেও ভালোবাসতে। সহজ-সরলভাবে জীবনকে দেখতে।’
দুবারের এভারেস্টজয়ী এম এ মুহিত নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে বলেন, ‘আমার জীবনে দুবার এভারেস্ট জয়ের চেয়েও বড় অর্জন হলো ইনাম আল হকের সঙ্গে পরিচয়।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন এভারেস্ট বিজয়ী প্রথম নারী নিশাত মজুমদার, গবেষক মফিজ ইমাম মিলন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক ওবায়দুল হক প্রমুখ।
বাংলাদেশের ডাকটিকিট, উদ্বোধনী খাম ও পোস্টকার্ডে স্থান পেয়েছে ইনাম আল হকের তোলা দুর্লভ পাখির ছবি। জন্মদিন উপলক্ষে প্রকাশিত হয় ‘নিসর্গ মানব ইনাম আল হক’ নামে একটি স্মারকগ্রন্থ।
অনুষ্ঠানের সমাপ্তিতে ইনাম আল হক সবাইকে ধন্যবাদ জানান এবং প্রকৃতি ও জীবনের প্রতি ভালোবাসা ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে বাড়তি আকর্ষণ ছিল জলের গানের পরিবেশনা।
